ওমর ফারুক কক্সবাজার প্রতিনিধি::
মানুষ ইলিশের স্বাদ ভুলতে বসেছে।বাংলাদেশে এবার এর স্বাদ নেয়া বিলাসিতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভরা মৌসুমেও বাজারে ইলিশ অনেক কম। আকাশছোঁয়া দাম
সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে।
একটি এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২৫শত টাকার ওপরে। বাজারে মাঝারি সাইজের ১২শত টাকার নিচে কোনো ইলিশ নেই। যা সাধারণ মানুষের কেনার নাগালের বাইরে। মানুষের মতে মাছের রাজা এই লোভনীয় ইলিশের স্বাদ নিতে ভুলে যাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
ইলিশ ধরার জেলে বা রাজ বংশি যারা ইংলিশ সাথে সম্পৃক্ত তারা বলছেন, এবার সাগরে ইলিশ মাছের উৎপাদন ভালো। কিন্তু জেলেদের জালে ধরা পড়ছে কম। এর মধ্যে বড় মাছ আরো কম। এ কারণে বাজারে ইলিশের সরবরাহ কম, দাম বেশি। যা বিগত বছরগুলোকে ছাপিয়ে গেছে। বিক্রেতারা বলছেন, এবারের মতো আগে এতো বেশি দাম ছিল কিনা তারা স্মরণ করতে পারছেন না। স্মৃতি হাতড়েছেন ক্রেতারাও। তবে বাজার নিয়ন্ত্রণে সারা দেশে ইলিশের যৌক্তিক দাম নির্ধারণে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে নির্দেশনা দেয়া হলেও তা কার্যকর হয়নি ২ মাসেও। এ কারণে মধ্যস্বত্বভোগী ও সিন্ডিকেটের কব্জায় থাকা ইলিশের বাজার বেসামাল বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ডুমুরিয়ার সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সোহেল মোঃ জিল্লুর রহমান রিগান বলছেন, ইলিশ প্রাপ্তি অমাবস্যা-পূর্ণিমা ও বৃষ্টির ওপর নির্ভর করে। ফলে অমাবস্যা ও বৃষ্টি হলে শিগগিরই অবস্থার পরিবর্তন হতে পারে। তবে সিলেটের সাদা পাথর খেকোর মত পদ্মা মেঘনা অববাহিকায় জাটকা ধরার মহোৎসব চলে বিভিন্ন সময়ে। এটা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণে আনতে পারলে আগামীতে ইলিশ আরো বেশি পাওয়া যাবে। এজন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছা সর্বাগ্রে প্রয়োজন। এছাড়া পদ্মা মেঘনায় পলি পড়ে ডুবো চরের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে ফলে সাগর থেকে ইলিশ নদীতে কম ঢুকে। আগামী ভাদ্র ও আশ্বিন মাসে আশানুরূপ ইলিশ ধরা পড়ার আশা করছেন জেলে, আড়তদার ও মৎস্য কর্মকর্তারা। এই সময়ে মাছের দামও কমে যাবে।
চরম আয় বৈষম্যের সমাজ ব্যবস্থায় ইলিশ মাছের রাজাকে সব মানুষ ঘরে তুলতে পারবেন না এটা স্বাভাবিক। ইলিশ পাতে নিতে হলে প্রচুর অর্থ থাকতে হবে। কিন্তু অস্বাভাবিক দামে এ বছর সব ছাপিয়ে গেছে। যাদের হাতে টাকা আছে তাদেরও ইলিশ কিনতে ভাবতে হচ্ছে। ডুমুরিয়া বাজারে চাউল ব্যাবসায়ী বিশিষ্ট শেখ আব্দুস সালাম বলেন, আমার যত টাকাই থাকুক, তিন হাজার টাকা দিয়ে তো একটা ইলিশ কেনা সম্ভব নয়।
প্রজনন মৌসুমে ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞার সময় নির্ধারণে যে বৈজ্ঞানিক গবেষণা হয়েছে তার নেতৃত্বে ছিলেন ইলিশ গবেষক ও মৎস্যবিজ্ঞানী ড. মো. আনিছুর রহমান। এই খ্যাতনামা ইলিশ বিশেষজ্ঞ বলেন, এবার ইলিশের দাম সত্যিই অস্বাভাবিক। এ দেশে ইলিশের প্রাচুর্য আছে। তারপরও এর এত দাম মেনে নেয়া যায় না। খুব দুর্ভাগ্যজনক।
মানুষ ইলিশের স্বাদ ভুলতে বসেছে, মাছের বাজার আকাশছোঁয়া
By Rasel Das |
২৪ আগস্ট, ২০২৫ |
196 views
ADVERTISEMENT
728 x 90
ADVERTISEMENT
Responsive