গেটম্যান নেই, প্রতিনিয়ত ঘটছে প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা

By Rasel Das | ২০ আগস্ট, ২০২৫ | 152 views
গেটম্যান নেই, প্রতিনিয়ত ঘটছে প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা

ADVERTISEMENT
728 x 90

ওমর ফারুক কক্সবাজার প্রতিনিধি::
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার ১০২ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলপথের ৭২টি লেভেল ক্রসিংয়ের মধ্যে ৫৬টি এখনো অরক্ষিত। দেশের প্রধান পর্যটন নগরীর রেলরুটে এতগুলো ক্রসিংয়ে গেটম্যান না থাকায় প্রায় সময় ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। গত এক বছরে এসব অরক্ষিত ক্রসিংয়ে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১৭ জন। এছাড়া ট্রেনের ধাক্কায় বেশ কয়েকবার বন্য হাতির মৃত্যুও ঘটেছে।

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের পরিবহন বিভাগ জানিয়েছে, পুরো রেলপথে মাত্র ১৬টি লেভেল ক্রসিংয়ে গেট বা গেটম্যান রয়েছে। অথচ ২০২৩ সালের ১১ নভেম্বর প্রায় সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে উদ্বোধন করা হয়েছিল এ বহুল প্রতীক্ষিত দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন। এর এক মাস পর থেকেই ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি কক্সবাজারে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। এতে পর্যটকদের ভ্রমণ সহজ হলেও অরক্ষিত লেভেল ক্রসিং হয়ে উঠছে মৃত্যুফাঁদ।

প্রাণঘাতী দুর্ঘটনার শিকার যাত্রীরা সবশেষ গত ১ আগস্ট রামু উপজেলার রশিদনগর এলাকায় একটি অনুমোদিত কিন্তু গেটম্যানবিহীন ক্রসিং পার হওয়ার সময় ঢাকাগামী ট্রেনের ধাক্কায় সিএনজি অটোরিকশা দুমড়েমুচড়ে যায়। এতে চালকসহ চার যাত্রী ঘটনাস্থলেই নিহত হন। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, প্রতিদিন শত শত মানুষ ঝুঁকি নিয়ে এ ধরনের ক্রসিং পার হন, যেখানে দুর্ঘটনা ঘটাটা সময়ের ব্যাপার মাত্র।

ঝুঁকিপূর্ণ সেকশন সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে ইসলামাবাদ-রামু সেকশন। সেখানে ১৭টি লেভেল ক্রসিংয়ের মধ্যে মাত্র একটি গেটম্যানের তত্ত্বাবধানে। একই অবস্থা চকরিয়া, ডুলাহাজারা, হারবাং ও লোহাগাড়ার বিভিন্ন স্থানে। কিছু ক্রসিংয়ে ‘এই গেটে কোনো গেটম্যান নেই, নিজ দায়িত্বে পারাপার করুন’ লেখা সাইনবোর্ড টানানো থাকলেও তা কোনো কাজে আসছে না।

প্রকল্পের জটিলতা রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ এখনো প্রকল্পের অধীনে রয়েছে এবং ডিসেম্বরের আগে রেলওয়ের কাছে হস্তান্তর করা যাবে না। স্থায়ী জনবল নিয়োগে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন না থাকায় আপাতত অস্থায়ী কিছু গেটম্যান নিয়োগ দেওয়া হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় একেবারেই অপ্রতুল।প্রকল্প পরিচালক ও রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) মো. সবুক্তগীন বলেন, “দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমাতে ইতোমধ্যে ৪৬টি আন্ডারপাস নির্মাণ করা হয়েছে। পাশাপাশি স্থানীয় জনগণের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে নিয়মিত কর্মসূচি চলছে। সব লেভেল ক্রসিং অনুমোদিত এবং পর্যায়ক্রমে সবগুলোতে গেটম্যান নিয়োগসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

স্থানীয়দের দাবি অবিলম্বে সব অরক্ষিত লেভেল ক্রসিংয়ে গেটম্যান নিয়োগ ও সিগন্যাল ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায় দেশের প্রধান পর্যটন শহরের রেলরস্তায় দুর্ঘটনা থামানো যাবে না বলে আশঙ্কা স্থানীয়দের।

ADVERTISEMENT
Responsive